মেয়েলি ভাষা নিয়ে পুরুষালি সন্দর্ভ-

মেয়েলি ভাষা নিয়ে পুরুষালি সন্দর্ভ-

অসিত দাস

 

আমার জীবনে মুখরা নারীদের আনাগোনা সেই ছেলেবেলা থেকেই। সেই ষাটের দশকে আমার গ্রামের বাড়ির এক পাঁচিলে থাকা একটি বাড়ির জাঁহাবাজ বা খাণ্ডারনি এক বধূ আমাদের শৈশব মুখরিত করে তুলেছিল। আমার বয়স যখন সাত-আট, তখন থেকেই মাঝবয়সী সেই মহিলার সাংসারিক বাক্যবর্ষণ আমাদের দৈনন্দিন শিরঃপীড়ার কারণ হত। তাঁর বাগবিস্তারের একটি প্রধান অংশ ছিল বাংলা বাগধারা। বলাবাহুল্য সেগুলি ছিল একটু প্রাকৃতধর্মী।

তিনকাল গিয়ে যে তাঁর স্বামীর পরমায়ু এককালে ঠেকেছে, তবু বুদ্ধি পাকল না, তা নিয়ে তাঁর মনে ছিল বিস্তর ক্ষোভ। স্বামীপ্রবর তাঁর কাছে ছিল ‘মিনসে’। ‘যমেরও অরুচি’ কথাটা সাতসকালে অনেকবার শুনতে হত। নাচতে না জানলে যে উঠোনের দোষ, সেটি উঠোন ঝাঁট দিতে দিতে তিনি সজোরে ঘোষণা করতেন প্রত্যহ সকালে। বলাবাহুল্য, বাক্যবাণের মূল লক্ষ্যস্থল তাঁর গোবেচারা স্বামী ( যিনি ছিলেন পার্টটাইম চাষী, পার্ট টাইম ঘরামি) হলেও মাঝে মাঝে আগুনের ফুলকির মত দুয়েকটি ছুটে যেত তাঁর এক মেয়ের দিকে। যে দেখতে ছিল বেশ ভালো, কিন্তু ভাগ্যদোষে একটু খুঁড়িয়ে হাঁটত। খোঁড়া বা খুঁড়ি না বলে ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড বলাই দস্তুর এখন। সেই নিরীহ মেয়েটি ইস্কুল যাওয়ার আগে মায়ের বিস্তর গালমন্দ শুনত। হাগুন্তির লাজ নেই, দেখুন্তির লাজ– বলে তার উপর তর্জনগর্জন করতেন আমাদের সেই জ্ঞাতিতুতো জেঠিমা। মাঝেই মাঝেই তেরো-চোদ্দ বছরের সেই মেয়েকে বুকে জাঁতা চাপিয়ে মারার ভয় দেখাতেন।

এহ বাহ্য। তা, তিনি এই সুমধুর বাক্যপ্রয়োগ শিখলেন কোথা থেকে? তা কি কোনও বইপড়া বিদ্যের ফলিত প্রয়োগ, না জন্মজন্মান্তরের সাধনায় রপ্ত কোনও বিদ্যা? নাকি যুগ যুগ ধরে চলে আসা কোনও অভ্যাসবৃত্তির দাস তিনি?

কিছু কি আছে আমাদের পড়ে আসা নাটক-নভেলে, ছোটগল্পে, কবিতায়?

মিনসে শব্দটির প্রয়োগ পাই দীনবন্ধু মিত্রের ‘নীলদর্পণ’ নাটকে। “মিনসের মুখখানি মনে পড়লি আজো মোর পরানডা ডুকরে ক্যাঁদে ওঠে। মোরে বাউ দিতে চেয়েনো।…. মোরে ঘুমুতি দিতনা, ঝিমুলি বলতো, ‘ও পরান ঘুমুলে’।”

কথোপকথন গ্রন্থে আছে, “ওলো তোর ভাতার কারে কেমন ভালোবাসে বল শুনি।

পুতুলনাচের ইতিকথায় কুসুম যে কী আশ্চর্য পর্যবেক্ষণক্ষমতার পরিচয় দেয় শশীর ডাক্তারির ধরনধারণ দেখে, তা আমাদের স্তম্ভিত করে–’ বুকে ওর হয়েছে কী? অত পরীক্ষে কীসের?

একটু সর্দি বসেছে বলে মনে হচ্ছে পরানের বউ। গরম তেল মালিশ করে দিও।

কুসুম ভীরুকণ্ঠে বলে, সর্দি ঠিক তো ছোটোবাবু? পরীক্ষের রকম দেখে ভয়ে বুকে কাঁপন নেগেছে, মা, ক্ষয় রোগেই বা ধরল।– ওলো মতি, বলিনি তোকে? বলিনি জ্বরগায়ে হাওয়ায় গিয়ে বসিস নে, ঠাণ্ডা লেগে মরবি?’

পদ্মানদীর মাঝিতেও মানিকবাবু কপিলার মুখে সঠিক মেয়ে-ভাষা বসিয়েছেন–’ তামুক ফেলিয়া আইছ মাঝি।

কুবের নামিয়া আসিয়া তামাকের দলাটা গ্রহণ করে।

কপিলা বলে, ডরাইছিলা হ? আরে পুরুষ!

তারপর বলে, আমারে নিবা মাঝি লগে?’

এ সবই চিরায়ত মেয়েলি ভাষার উদাহরণ।

 দীনবন্ধু মিত্রেরই সধবার একাদশী-তে যেমন দেখি, ‘ কুমু। এর চেয়ে বিধবা হয়ে থাকা ভাল – আমি

ভাই আর সইতে পারি নে, আমি গলায় দড়ি দে মরবো।’

মেয়েদের ভাষার নিজস্ব কিছু ডায়ালেক্ট থাকে।  সেগুলি মেয়েরা মেয়েদেরই বলে। পুরুষের সাধ্য নেই সেই ভাষার চোরকুঠরিতে পা রাখার।

আমার সেই মুখরিত বাল্যকালে, নিজেদের একান্নবর্তী পরিবারেও মেয়েদের ভাষার এহেন বহর দেখতে-শুনতে হয়েছে।

আমার জ্যাঠামশাই ছিলেন প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক কাম হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক। তিনি ছিলেন নির্বিরোধী ভাবুক প্রকৃতির মানুষ। অথচ তাঁকেও শুনতে হত জ্যাঠাইমার নানান কথার হুল।

‘সারাদিনই ঠাকুর-ঠাকুর করে মেতে আছে, দুটো কথা শোনারও ‘সাবগাস’ নেই।’

এই সাবগাস মনে হয় ফুরসত, ‘সাবকাশ’ তথা অবকাশ শব্দের তদ্ভব রূপ! জ্যাঠামশাই ছিলেন অনুকূল ঠাকুরের একনিষ্ঠ সেবক। ধ্যান করার অভ্যাস ছিল ভোর তিনটেয় উঠে।

জ্যাঠাইমার বিস্তর অভিযোগ ছিল বড়ছেলের উপর। বড়ছেলে হাইস্কুলের বাংলার শিক্ষক। আমাদের ডেকে বলতেন, “আর বাবা, এতো লাঞ্ছনা- গঞ্জনা সহ্য করা যায় না। এই বয়সে ওর কাছ থেকে কত রপমান হতে হবে! এই বয়সে এত দগ্ধানি, এতো তসিল কেন রে বাবা।”

হ্যাঁ, ঠিকই লিখেছি। অপমানকে রপমানই বলতেন, তসিল বলতেন কাকে, তা অনেকদিন বুঝিনি।

পরে অভিধান ঘেঁটেও কোন্ শব্দের বিকৃতরূপ এটি বুঝতে পারিনি। আরবি থেকে আসা তহশিল বা তশিল মানে সম্পদ, অর্থ। তার সঙ্গে তো এই তসিল খাপ খায় না। তবে আরবি থেকে বাংলায় আর একটি সমউচ্চারণের শব্দ এসেছে, সেটি হল ‘তসল্লি’। মানে সান্ত্বনা, প্রবোধ। বড়ো ছেলের কাছে ‘রপমানিত’ হওয়ার পরে বাড়ির অন্য ছেলেদের, ছেলের বউদের সান্ত্বনা বা প্রবোধও হয়ত তাঁর অসহ্য ঠেকত। তসল্লি তিনি সইতে পারতেন না। এই তসল্লি থেকেই হয়ত তাঁর বলা ‘তসিল’ এসেছিল।

“সাঁকি চিরে যাবে, তবু বউরা কেউ আমার কোনও কথায় কান দেবে না,”–বলেও আমাদের মতো সুকুমারমতি বালকের কাছে ছিল তাঁর অভিযোগ-অনুযোগ।  কণ্ঠনালি অর্থে’সাঁকি’ বা ‘শাঁকি’ শব্দটি কোনও অভিধানে নেই। পরবর্তীকালে যখন বাড়িতে

আরবি-ফারসি-উর্দু-বাংলা অভিধান ঢুকল, তখন দেখলাম, আরবি শাকি মানে গলার নালি। আরবি থেকে বাংলায় এসেছে। দু’হাজার বছরের ইসলামি শাসনে থাকায় আমাদের ভাষায় জানা-অজানা কত শব্দ যে ঢুকে গেছে, তার ইয়ত্তা নেই।

চলমান ভাষাবিজ্ঞান যে প্লেটো-অ্যারিস্টটল-পাণিনি থেকে ফার্দিনান্দ দ্য স্যোসুর, ব্লুমফিল্ড হয়ে ভাষাচার্য সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় ও ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ মারফত অনেকটা পথ এগিয়ে এসেছে, তা জানলে মেয়েদের নিজস্ব ভাষা, নিজস্ব বাচনভঙ্গির হদিশ পেতে অসুবিধে হয় না।

এইবার বলি দাম্পত্যজীবনে নিজস্ব অভিজ্ঞতার কথা। ১৯৮২ তে ডাক্তারি পাস করে, আর ১৯৮৭তে সংসারজীবনে প্রবেশ করে আমার যেন জ্ঞানচক্ষু উন্মীলিত হল। ১৯৮২ থেকে ১৯৯৫ পর্যন্ত গভীর নিষ্ঠার সঙ্গে প্র্যাকটিশ করি। তারপর মাথায় সাহিত্যের ভূত চাপে। হাইস্কুলের হেডমাস্টারের ছেলে হওয়ার সূত্রে কিছু নামী অভিধান ছিল বাড়িতে।

গৃহিণীর বরাবরই পুজোআচ্চা, ব্রত পালনের ঝোঁক।

সাতসকালে ঠাকুরঘর থেকে ভেসে আসত তাঁর উদাত্ত কণ্ঠের আওয়াজ, ‘তেত্রিশ কোটি দেবদেবী, যে যেখানে আছ…’।  বা সমধর্মী বাক্যের অনর্গল প্রয়োগ।

শুনতে শুনতে একদিন মনে প্রশ্ন জাগল, এই কোটি-র অন্য কোনও অর্থ নেই তো! কেননা উচ্চকোটির মানুষ বলে একটি লব্জের কথাও আমাদের জানা। অভিধানে কোটি শব্দের আর একটি অর্থ পেলাম ‘অগ্র’ বা শীর্ষ। তাহলে অগ্রবর্তী বা শীর্ষস্থানীয় দেবতাই কি কোটিদেবতা? খুঁজতে খুঁজতে পেলাম ‘দ্বাদশ আদিত্য, একাদশ রুদ্র, অষ্ট বসু, ইন্দ্র ও প্রজাপতি(মতান্তরে অশ্বনীকুমারদ্বয়) নিয়ে গঠিত তেত্রিশসংখ্যাবিশিষ্ট কিচেন-ক্যাবিনেট!  তেত্রিশজন বৈদিক মূলদেবতাই যে ‘কোটি’ শব্দের

অপব্যাখ্যার ফলে ‘তেত্রিশ কোটি’ সংখ্যায় পর্যবসিত হয়েছে, তা নিয়ে মনে কোনও সংশয় রইল না।

গিন্নির  ইতুপুজো নিয়েও একটি ধন্দ ছিল মনে। চিন্তাহরণ চক্রবর্তী প্রণীত ‘হিন্দুর আচার-অনুষ্ঠান’ ও পল্লব সেনগুপ্তের ‘পূজাপার্বণের উৎসকথা’-য় ‘ইতু’ শব্দের দু’রকম ব্যুৎপত্তির কথা বলা হয়েছে। চিন্তাহরণবাবু যখন ‘মিত্র’ বা সূর্য থেকে ইতু  আসার কথা লিখেছেন, পল্লববাবু ‘ঋতু’ থেকে ইতু আসার কথা লিখেছেন। আমার হাতে তখন এসে গেছে সত্যনারায়ণ দাশের লেখা ‘বাংলায় দ্রাবিড় শব্দ’ বইটি। সেখানে ইতু শব্দটিকে তামিল বা কন্নড় ভাষা থেকে আগত বলা হয়েছে। ইতু মানে সেখানে শিশু, বাচ্চাকাচ্চা, প্রজনন। ইতুপুজো তাহলে মাষষ্ঠীর আরাধনার সমগোত্রীয়!

এইভাবে পত্নীর পুজোআচ্চার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হয়ে একে একে খুঁজে পেলাম অক্ষয়তৃতীয়া, কলাবউ, আউনিবাউনি ইত্যাদি শব্দবন্ধের বিকল্প ব্যুৎপত্তি। প্রত্যেকটির অবতারণা করে লেখাটিকে কণ্টকিত করতে চাই না, অবান্তরও সেটি।

 অতএব মেয়েলি ব্রতকথার মধ্যেও যে পুরুষের জ্ঞানান্বেষণের বিষয়বস্তু থাকতে পারে, তা অভ্রান্তরূপে প্রমাণিত হচ্ছে।

গিন্নির মুখে যে বাগধারাটির প্রয়োগ বারবার দেখি, সেটি হল, ‘নেপোয় মারে দই’। এই নেপো যে কী জিনিস, তা দেবা না জানন্তি, কুত মনুষ্যা। অভিধানে নৃপ থেকে নেপো-র আগমনবার্তা জানানো হয়েছে। রাজা কেন যে দই খেতে যাবেন, তা অবশ্য বোঝানো হয়নি! খুঁজে দেখলাম পুরো প্রবাদটি হল, ‘একপুরুষে করে টাকা, অন্য পুরুষ খায়/ যার ধন তার ধন নয়, নেপোয় মারে দই।’

নেপো কে নফর থেকে বা নাপিত থেকে আগত ভেবেও মেলানো যায় না। নফর মানে চাকর। দইয়ের সঙ্গে লিঙ্ক খুঁজে পাওয়া যায় না। ভাবতে ভাবতে ও অভিধানের পাতা ওল্টাতে ওল্টাতে নিপান শব্দটির দেখা পেলাম একদিন। নিপান মানে দুগ্ধদোহনপাত্র বা দুগ্ধভাণ্ড। নিপানের কারবারি বা গোদোহক হল নিপানী। নিপানী থেকে নেপো আসতেই পারে। অসৎ দুধ-দুইয়ে ব্যক্তির হাতসাফাই দুধ-দই ইত্যাদি সরাতেই পারে। গরুর মালিকের ধন, অন্যের ধন হয়ে যায় এইভাবে। যাই হোক, এটিই নিশ্চয় সর্বজনমান্য ব্যাখ্যা নয়। তবে একটি ক্ষীণ আলোর রেখা তো বটেই।

নবারুণ ভট্টাচার্যের একটি উপন্যাসে ‘চুদুরবুদুর’ শব্দটি আছে বারবার। সেটা নিয়েও মাথা ঘামাচ্ছি দেখে, সহধর্মিনী বেজায় খাপ্পা হয়ে উঠলেন। বললেন, সুখে থাকতে ভূতে কিলোয়। শব্দটি যে অশ্লীল, তা নিয়ে বিন্দুমাত্র সন্দেহ ছিল না গিন্নির মনে। তারপর যখন চূত আর বদর মিলেই চুদুরবুদুর হয়েছে দেখালাম, তিনি আমতা আমতা করে সেটা মেনেও নিলেন।

বলা বাহুল্য চূত মানে আম আর বদর মানে কুল। এই দুটি ফল পরস্পর বিপরীতধর্মী। একটি আকারে বড়, একটি ছোট। একটি গ্রীষ্মে হয়, একটি শীতে হয়, একটি মূলত মিষ্টি, একটি মূলত টক। তাই উল্টোপাল্টা বিপরীতমুখী কথা বলা, এদিক-ওদিক বকাকে ‘চূত-র বদর’ করা তথা অপভ্রংশে ‘চুদুরবুদুর করা’ বলা যায়। বাড়াবাড়ি, গড়িমসি অর্থও করা যায় এইভাবে।

বাংলায় কৃষিভিত্তিক প্রবচনে সমধর্মী প্রয়োগ আছে। মেয়েরাও সেগুলো বলেন। ফুল-ফল-ফসল লুকিয়ে আছে এগুলির মধ্যে। ধানাইপানাই করা, খেজুরে আলাপ করা, আমড়াগাছি করা, তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠা, মুখে খই ফোটা, তিলকে তাল করা,– এগুলি সবই মানুষের কথা বলার বিভিন্ন স্টাইল। স্ত্রীপুরুষ নির্বিশেষে বলে। সুতরাং ‘চুদুরবুদুর করা’ লব্জটি মেয়েদের বলতে আপত্তি থাকার কথা নয়।

মেয়েদের নিজস্ব ভাষার কথা উঠলে টিভি-সঞ্চালিকাদের কথা বলতেই হয়। কীভাবে যে তাঁরা বাংলাভাষাকে দুমড়েমুচড়ে নেন অনায়াস ভঙ্গিতে, তা দেখার মতো। জিভ আর তালুর স্পর্শে তাঁরা বাংলাভাষার রূপ-রং নিংড়ে বার করেন। যে দক্ষতায় তাঁরা ব আর ভ এর মাঝামাঝি উচ্চারণে ‘ভোট’ উচ্চারণ করেন, তা সত্যিই তারিফযোগ্য। অনেকবার চেষ্টা করেও পারিনি।

পরিশেষে বলি যে বাংলাভাষার প্রথম স্বীকৃত উপন্যাস হল হানা ক্যাথেরিন মুলেন্স লিখিত ‘ফুলমণি ও করুণার বিবরণ'(অন্য দুই দাবিদার টেকচাঁদ ঠাকুরের আলালের ঘরের দুলাল ও কাঙাল হরিনাথের বিজয়বসন্ত), প্রথম যে-ভাষা গতিপ্রাপ্ত হল ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ‘সীতার বনবাস’-এ, আর সাবালকপ্রাপ্ত হল বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘দুর্গেশনন্দিনী’-তে, সে ভাষায় মেয়েদের নিজস্ব ভয়েস তো থাকবেই। সেটাই স্বাভাবিক। মেল শভেনিজম যতোই তা অস্বীকার করুক না কেন।

 অসিত দাস
পুকুরঘাট

পুকুরঘাট

একদিন আমরা মাত্র কয়েকজন সদস্য নিয়ে পুকুরঘাট নামের একটি মেয়েদের ভার্চুয়াল দল খুলে ছিলুম। অচিরেই সে কয়েকটি সদস্যের দল কয়েক হাজার সদস্যের মেয়েদের দল হয় ওঠে। পুকুরঘাট দলের মত এত গুণী মেয়েদের সমাহার বাংলাদেশে খুব কম ভার্চুয়াল দলে আছে। কাজেই সেই দল সেখানেই আটকে থাকবে না বলা বাহুল্য। তাই পুকুরঘাট দলের অন্যতম উদ্যোগ হিসেবে প্রকাশিত হলো পুকুরঘাট পত্রিকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 thoughts on “মেয়েলি ভাষা নিয়ে পুরুষালি সন্দর্ভ-

  1. অনেক কিছু নতুন জানলাম। নেপো তো বটেই।
    সাবগাশ আর শাঁকি কখনো শুনিইনি।

  2. সমৃদ্ধ হলাম। বেশ লাগল পড়তে।আমার বড়মা মানে মায়ের দিদিমার কাছে নিঅ্যাগগুন কথাটা খুব শুনতাম। কাউকে তিরষ্কার করতে কথাটা ব্যবহৃত হত। পরে জেনেছিলাম মুখে আগুন থেকে মুয়ে আগুন এবং তার থেকে ওই নিঅ্যাগগুন কথাটা এসেছে।

  3. মজা পেলাম নিজের সঙ্গে একটা মিল পেয়ে। আমারও ডাক্তারি পাশের বছরটি 1982 আর পলাশীর যুদ্ধের বছরটি (পরাধীনতা দিবস 😁)1987। সাহিত্যের সঙ্গে কিছু যোগ আছে। তাই লেখক কোন কলেজের ও 1982র কোন ব্যাচ(সে বছর দুটো ব্যাচ বেরিয়েছিল) জানার কৌতূহল রইল।
    লেখাটি ব্যতিক্রমী। প্রাকৃত ও চলিত শব্দের সম্ভার নিয়ে এই সমৃদ্ধ আলোচনাটি পড়ে ঋদ্ধ হলাম। বাংলা স্ল্যাং নিয়ে অভ্র বসু বা সত্ৰাজিত গোস্বামীর বিস্তারিত কাজ রয়েছে। তা মনে করায় এই লেখা।
    ভাষাটি আকর্ষণীয়। লেখার গুণে শেষ অব্দি ধরে রাখে।
    ওনার অন্যান্য লেখা পড়ার ইচ্ছে রইল।