বই-ভব বই কী

এই বিভাগে থাকবে নানান বইয়ের খবর। আজ থেকে শুরু হলো বইমেলা আর বইমেলা মানেই মেলা বই। আগামী কদিন বইমেলায় পেতে পারেন এমন নানান বইয়ের খবর আমাদের দেবেন রমণীতেজ পাঠক।
বইমেলা মেলা বই
আজকের বই নির্জন সাক্ষর
রমণীতেজ পাঠক
এই কিছুদিন আগেও বাংলার ঝড়ে শুকনো পাতার সঙ্গে উড়ে বেড়াতো বাতিল কবিতার পাতা, কবির নিজে হাতে লেখা। পুরনো জিনিসের গাদায় একখানা পাতা লাল হয়ে যাওয়া কবিতার খাতা থাকবেনা এমন বাঙালি বাড়ি ছিলো বিরল। পাঁচ বছর আগেও প্রকাশকদের ঘরে নির্বাচিত হওয়া হাতে লেখা কবিতার খাতা পড়ে থাকতো সযত্নে আর বাতিল কবিতার খাতা পড়ে থাকতো অবহেলায়। জমে জমে পাহাড় হবার আগে তাঁদের মনে হতো খাতাগুলো নিয়ে গেলে বাঁচি।
রবি ঠাকুর দু লাইন নিজে হাতে যাঁদের লিখে দিয়েছিলেন তাঁদের কাছে চুয়ান্ন হাজার টাকা দামের এক ভরি সোনার চেয়ে যত্নে ভল্টে রাখা থাকতো সেকটি লাইন। কবির হস্তাক্ষরে কবিতা পাওয়া স্বয়ং কবিকে পাওয়ার মতোই উত্তেজিত করতো বাঙালিকে।
করতো, কিন্তু এখনও সে উত্তেজনা বয়ে যায় কি বাঙালির মনে? কম্পিউটার আর মোবাইলের কি বোর্ড এবং বাংলা ফন্ট কেড়ে নিয়েছে বুঝি সে উন্মাদনা। এখন হাতে লেখা কবিতার খাতা কেবলই নস্টালজিয়া। নাকি আপনি আজও চান কবির সহস্তে লেখা কখানি কবিতার লাইন। আপনি কি আজও সমান উত্তেজিত হন, কবির প্রেমে নিমজ্জিত হন হাতে লেখা কবিতার লাইন দেখে? এ প্রশ্নের উত্তর খুব দৃঢ়ভাবে জানা না থাকলে সংগ্রহ করুন নির্জন স্বাক্ষর বল বইটি।
দেখুন সেই বইয়ের উন্মাদনা ঘিরে ধরে নাকি আপনার মন।
দে’জ পাবলিশিং তাঁদের পঞ্চাশ বছর উপলক্ষে প্রকাশ করেছে বিশেষ কয়েকটি বই, তার মধ্যে “নির্জন স্বাক্ষর” একটি। এই বইটি আসলে একান্নজন কবির নিজের হাতে লেখা একান্নটি কবিতার ফ্যাক্সিমিলি সংস্করণ। লাল খেরোর খাতার মতো দেখতে বইটির গায়ের পাকানো সুতো খুললেই ঝপ করে বেরিয়ে আসে একান্নজন কবির স্বহস্তে লেখা একান্নটি চমৎকার কবিতা।
এ বইয়ে কেবল নামী, প্রবীণ বা প্রতিষ্ঠিত কবিরা লিখেছেন এমন নয়। বহু নবীন লেখকেও লিখেছেন। তাঁদের মধ্যে খুবই যত্নে লিখেছেন কেউ কেউ। তাই অনেকেই ছুঁয়ে ফেলেছেন পোড় খাওয়া কবিদেরও। তবে সংকলিত কবিতার বইয়ে সমস্ত কবিতার মান একই রকম হবে এ দুরাশা। এ বইয়ে কবিতার নিবিষ্ট পাঠকের কাটা ছেঁড়া করার সুযোগ কেবল এটুকুই। আর তাঁদের মধ্যে যদি কেউ হস্তলেখ বিশেষজ্ঞ থাকেন হাতের লেখার সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে পারেন কবিতার সততাকে। খুব বেশি দোষ পাওয়া দুষ্কর হবে বলাই বাহুল্য।
বইটির নির্মাণগত দিক থেকে অনন্য। নরম তুলোট কাগজের অনুভব নিয়ে আসে খেরোর খাতার ঢঙের কাপড়ের ওপর ছাপা টকটকে লাল কভারটি। ওপরে নির্জন স্বাক্ষর নামটি অনবদ্য করে তুলেছেন রঞ্জন দত্ত।। ভেতরের পাতার ক্রমটিও বেশ বড় ফন্টে বইয়ের নামসহ থাকায় আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।
বইটিতে লেখা “প্রকাশকের কথায়” দেখতে পাবেন এ বই দে’জ সুবর্ণ জয়ন্তী কবিতা উৎসব ও গ্রন্থমেলা উপলক্ষে প্রকাশিত। এই বইয়ের সঙ্গে দে’জ পাবলিশিং প্রকাশ করেছে কবিতার উদধৃতি সমেত একান্নটি পৃষ্ঠা ফলক বা বুকমার্ক। যেখানে চমৎকার ডিজাইনে চর্যাপদ থেকে আধুনিক কবিদের কবিতার লাইন ছাপা হয়েছে। নির্জন সাক্ষর বইটি তো বটেই, বুকমার্কগুলিও অবশ্য সংগ্রহ যোগ্য।
Issh ajkei gechilam Deys a agey jodi ei post ta dekhtam. Asadharon sangrohe rakhar mato
এই বইটা কিনবই! বুকমার্কও!