প্যারিস ঘুরতে গিয়ে যা ঘুরেফিরে বারবার আসবে তা হলো শ্যেন নদী -আর রাস্তার দুধারে অজস্র গলি আর ক্যাফে। রঙবেরঙের ছাতার নিচে ছড়ানো ছিটানো চেয়ার আর দিনভর সব বয়সী নারী পুরুষের আড্ডা।এই অলস, নির্ভার,মজলিসি মেজাজই প্যারিসকে ইওরোপের আর সব শহরের থেকে আলাদা করে দিয়েছে।আড্ডাই যেন আত্মা প্যারিসের।কবি বোদলেয়ার,মালার্মে থেকে রেনো হুগো,শিল্পী ক্লদ মনেট থেকে মাটিস- পিকাসো-গগ্যাঁ সবার ভাবনা কল্পনার আতুরঘর এখানেই।আমরাও চলতে ফিরতে ঘুরে ঘুরে দেখছি কেউ কবিতা পড়ছেন তাকে ঘিরে নিবিষ্ট শ্রোতার দল, কেউ ছবি আঁকছেন পথচারী সন্তর্পনে পাশ দিয়ে পেরোচ্ছেন যাতে তার অসুবিধা না হয়,গড়িয়ে যাওয়া তুলি ছুটে এসে কুড়িয়ে দিচ্ছে অপরিচিত বালক আমি থমকাচ্ছি – দাঁড়িয়ে পড়ছি দুচোখ দিয়ে শুষে নিচ্ছি এই অপার্থিবকে।
১৯একর জায়গা জুড়ে কনকর্ড স্কোয়ার প্যারিসের অন্যতম জনসমাগমের জায়গা যার মাঝখানে রয়েছে luxor obelisk মানে ৩৩০০বছরের পুরোনো ৭৫ ফিট(২৩ মিটার) লম্বা ২৫০টন ওজনের একটি মিশরীয় স্হাপত্য যা ১৮২৯সালে কূটনৈতিক উপহার হিসেবে মিশর থেকে আসে।সেই সময় এই বিশাল ওজনের উচ্চতার স্হাপত্যটির প্যারিসে পৌঁছনো খুব সহজ ব্যাপার ছিল না, সময় লেগেছিল সাতবছর। ১৮৩৬-এর ২৫শে অক্টোবর এটি প্যারিসে পৌঁছোয়। এই স্হাপত্যর দুদিকে দুটি অপূর্ব ফোয়ারা এবং চারিদিকে অপরূপ সব মূর্তি এই চত্বর কে স্বর্গীয় করে তুলেছে।যদিও পঞ্চদশ লুইকে গৌরবান্বিত করার জন্য এই কনকর্ড স্কোয়ার তৈরি হয়েছিল কিন্তু আজ এটির পরিচয় বদলে গেছে।ফরাসী বিপ্লবের সময় বিভিন্ন অভিজাত রাজন্যবর্গের সঙ্গে ১৭৯৩ এর ২১শে জানুয়ারী ষোড়শ লুই এবং কুইন মেরী আতোনিয়েৎ(Queen Marie Antoinette-সেই রানী যিনি ফ্রান্সের গরিব প্রজারা খাবার রুটি পাচ্ছে না শুনে বলেছিলেন ‘রুটি পাচ্ছে না তো কেক খাচ্ছে না কেন!’, তাঁকে এখানেই গিলোটিনে হত্যা করা হয়। এই কনকর্ড স্কোয়ারকে ঘিরেই রয়েছে প্যারিসের সব মহার্ঘ্য বিলাসবহুল হোটেল। গাইড ইলিয়ানা এক বিশাল প্রাসাদের দিকে আঙুল দেখিয়ে বললো ‘ইন্ডিয়ার মোডি এলেই ঐ হোটেলে থাকেন।’আমি বোকার মতো ঠিক তক্ষুনি জিজ্ঞাসা করে বসলাম ‘সেই গিলোটিন টা কোথায়?’
সফর শুরুর আগেই আমাদের জানানো হয়েছিল ব্রেকফাস্ট আর ডিনার দেওয়া হবে, লাঞ্চ কিন্তু নিজেদের কিনে খেতে হবে কাজেই নিজেদের রেস্ত বুঝে প্রচুর শুকনো খাবার যেন নিয়ে যাই।আমার ইওরোপ বিশেষজ্ঞ বোন তুতুন (কর্মসূত্র বছরে সে বহুবার ইওরোপ যায়) বলেছিল ওদেশে গিয়ে গরম খাবারের কথা ভুলেও যেন না ভাবি। বড়জোর লাঞ্চ টাইমে রাস্তার ধারে চেয়ারে বসে গরম কফি উইথ হিমশীতল স্যান্ডুইচ খেতে পারি। বড়ো রেস্তোরাঁয় গরম খাবারের ছ্যাকা পকেট সইতে পারবে না। সেই মতো রোজ হোটেলে ব্রেকফাস্টে আমরা যাকে বলে ফাঁসির আসামীর শেষ খাওয়ার মতো গলা অবধি গন্ডেপিন্ডে খেয়ে বেরোই।ফরাসী দেশের বেকারী প্রোডাক্ট বিশ্ববিখ্যাত।প্রায় কুড়ি পঁচিশ রকমের লোফ-কেক – কুকিজ।চেনা অচেনা ফল -ফলের রস প্যানকেক।দশ বারো রকমের কফি – চা।পর্ক-হ্যাম-বীফ-সসেজ-ডিমের হাজারো পদ থরে থরে সাজানো। কতো খেতে পারো খাও – সব পেটে পুরে নিয়ে যেতে হবে ব্যাগে পোরার উপায় নেই।হাতিবাগানের সাহা গিন্নি দেখি কোচরে প্লাস্টিক এর ব্যাগ এ ফটাফট ডিমসেদ্ধ,কেক চালান করছেন।গোয়ার জেঠানী দম্পতি আপেল – কলা ব্যাগে পুরছেন – আম্বালার সিংজি ইয়াব্বড়ো একখানা পাউরুটির পুরোটাই জ্যাকেটস্হ করলেন – করবে না কেন ওঁদের টেবলে তো আর বিবেকানন্দ বসে নেই।আমি কুটকুট করে খাই আর জুলজুল করে তাকাই সব্বাই কেমন সুগৃহিনীর মতো জলখাবার খেতে খেতেই দুপুরের খাওয়ার বন্দোবস্ত করে ফেলছে আর আমি পেট টিপে টুপে দেখছি কোন কোনে আর একটুকরো কেক ঢুকাতে পারি।আরে ধ্যাত্তেরি নিকুচি করেছে সৎ গিরির! খাওয়া শেষ করে কোনোদিকে না তাকিয়ে উঠে হনহন করে গিয়ে একটা দু লিটারের জলের বোতলের ছিপি খুলে জল খেতে খেতে একজনের গনগনে চোখের সামনে দিয়ে বোতল নিয়ে ডাইনিং হল থেকে বেরিয়ে গেলাম।সব্বাই জানে – জল চুরি – চুরি নয়!
শুকনো খাবার ছাড়াও জামাকাপড় কে কি নেবো আমার আর চৈতীর মধ্যে এই নিয়ে ঘন্টা ধরে হিসেব করলে দু বছরে অন্তত দুশো ঘন্টা আলোচনা তো হয়েইছে। অনেকদিন আগে রীতা ভিমানি (বিখ্যাত ক্রীড়া সাংবাদিক ও ধারাভাষ্যকার কিশোর ভিমানীর স্ত্রী)-এর একটা লেখায় পড়েছিলাম (বিদেশে গিয়ে ভারতীয় মহিলাদের সাজগোজ কেমন হওয়া উচিত বিষয়ে) বিদেশে শাড়ি পড়লে যেমন নিজের দেশকে রিপ্রেজেন্ট করা যায় তেমনি ভিড়ের মাঝে আলাদাও হওয়া যায়।জীবনে প্রথম সুযোগ হলো ভিড়ের মাঝে আলাদা হওয়ার! ঠিক করলাম আমরা শাড়ি পড়ে মোনালিসা দেখতে যাবো।শুধুকি আমরাই মোনালিসা কে দেখবো?ও আমাদের দেখবে না? কি শাড়ি নেওয়া যায় সেই চিন্তায় কতো যে বিনিদ্র রাত কেটেছে সে আর নাই বললাম।শেষে অনেক ভেবে চিন্তে ঠিক হলো তসরই হলো সেই শাড়ি যাতে আমরা মোনালিসার ও মাথা ঘোরাতে পারবো। এখানে বলে রাখি লুভ্যর যাবার দিন রেডি হয়ে বাসে উঠে দেখি চৈতি যথারীতি প্যান্ট – টপ পরে হাজির।আমার আর বেয়ানের শাড়ি পরা দেখে ওর চোখ কপালে তুলে প্রশ্ন ‘ ওমা আজ লুভ্যর যাবো নাকি’?
এবার ভাবনা খাবার দাবার।দশদিন পাঁচজনের লাঞ্চ।বাঙালির ভাতের বিকল্প খুঁজে বের করা তাও আবার টানা দশ দিনের! ভাবা যায়! জলভরা সন্দেশ,মুড়ি,ঝুড়িভাজা,চানাচুর,চিড়েভাজা, শোনপাপড়ি,কাজুবরফী,নাড়ু নিমকি(সদ্য পুজো গেছে তো!),পেষ্ট্রি ,কেক ,কাজু,আমন্ড-এর সঙ্গে ‘তাই হলো আর ডাল হলো’র মতো লেগে থাকতো চৈতীর ‘বাপুজী কেক’! সব আলোচনা শেষ হতো চৈতীর বাপুজীতে গিয়ে! জল কেলেঙ্কারির দিন প্ল্যানমাফিক লাঞ্চ এ এটা সেটা খাবার শেষে রায় বাবুকে বাপুজি ধরানো হল।ওটি খেয়ে জল খাবেনা কার সাধ্যি? চোরাই মাল এর ভাগ নিলে আর তেজ দেখানো উচিত না। এটুকু বিবেচনা আশা করাই যায়,তাই না?
৭০,০০০বর্গমিটার এলাকা,৩৫০০০শিল্পকর্ম,মোট সংগৃহীত নিদর্শনের পরিমান ৪কোটি ৮০লক্ষ যা মানব সভ্যতার ১১০০০বছরের চিহ্ন বুকে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।মেসোপটেমিয়া আর্ট থেকে মুঘল আর্ট মোনালিসা থেকে বৃটিশ রাজা,ফার্ণিচার থেকে ফসিল কি নেই! বলছিলাম লুভ্যর মিউজিয়াম এর কথা।এখন আমি বলতেই পারি চার ঘন্টায় ল্যুভর দেখেছি আর সেটা যদি আপনি বিশ্বাস করেন তাহলে আপনার সারল্যকে দন্ডবৎ।প্রতিটির জিনিসের সামনে আড়াই মিনিট করে প্রতিদিন দাঁড়ালে লুভ্যর শেষ করতে ছ’মাস লাগবে।কাজেই আপনারা যারা যাননি তাদের সঙ্গে আমার তফাত আমি গেছি, ব্যস এটুকুই!
১২শতকে এক বিশাল প্রাসাদে এই জাদুঘরের গোড়াপত্তন হয় শুরুতে এটি ছিল একটি ব্যক্তিগত সংগ্রহশালা যা অভিজাত এবং রাজপরিবারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। ১৫৪৬ সালে ফ্রান্সিস প্রথম পুরোনো প্রাসাদটি নতুন করে তৈরি করার সময় ল্যুভ বা সংগ্রহশালাটির নতুন পথে যাত্রা শুরু হয়।পরবর্তীকালে যারাই ক্ষমতায় এসেছে ত্রয়োদশ – চতুর্দশ লুই এর আমল থেকে এই শিল্পভাণ্ডার এ সারা পৃথিবী থেকে আনা জিনিস যোগ হতে থাকে। ১৬৮২ সালে চতুর্দশ লুই ভার্সাইতে রাজপ্রাসাদ স্হানান্তরিত করলে লুভ্যর আর রাজপ্রাসাদ না থেকে শুধুই জাদুঘরে পরিনত হয়। এরও একশো বছর পর ১৭৯৩ সালে লুভ্যর আম আদমির জন্য খুলে দেওয়া হয়।
লুভ্যরে পৌঁছনোর সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের ফ্রেঞ্চ হেল্থ পাস (করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট দেখানোর পর যা আমাদের দেওয়া হয়েছে এবং পইপই করে বলা হয়েছে কর্ণের সহজাত কবচ কুণ্ডলের মতো সব সময় কাছে রাখতে কারণ যখন তখন দেখতে চাইতে পারে) হাতে নিয়েই বাস থেকে নামতে বলা হলো। টিকিট কাটাই ছিল লাইনে দাঁড়িয়ে হঠাৎ খেয়াল হলো রায়বাবুর আর বেয়ানের হেল্থ পাস আমার হাতে কিন্তু আমার হেল্থ পাস কই! যে যার পাস হাতে নিয়ে সটকে গেল লাইনে, আমি ব্যাগ হাতড়ে পাগলের মতো খুঁজতে খুঁজতেই একেবারে লাইনের মুখে দশাশই আফ্রিকান দ্বাররক্ষীর সামনে। দলের সবাই এগিয়ে গিয়ে আমার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছে। কি করবো আমি? মোনালিসা দেখবো না তাহলে? দেখবো না আমি মোনালিসা? শেষ চেষ্টা একটা করতেই হবে। মরিয়া আমি, কলকাতার ডাক্তার এর প্রেশক্রিপশনটা ভাঁজ করে এগিয়ে দিতেই উনি না দেখে সরে দাঁড়াতেই কাগজ হাতে নিয়েই দে ছুট! সেদিনের আমার শাড়ি টিপ এর দিকে ভদ্রলোকের মনোযোগের পুরো সুযোগ আমি নিতে পেরেছিলাম নইলে মোনালিসা আমার অদেখাই থেকে যেতো। থ্যাঙ্কস টু রীতা ভিমানি।
লুভ্যরের ভেতরে ঢুকে প্রথমেই আমাদের হেডফোন পরে নিতে হলো আর গলায় ঝোলানো হলো ছোট্ট মোবাইলের মতো রিসিভার। আমরা একটি করে দ্রষ্টব্যর সামনে যাব আর ইলিয়ানা সেটা সম্বন্ধে বলতে থাকবে। ভিতরের ভিড়,অন্য গাইড দর্শনার্থীদের কলরবে যাতে আমাদের শুনতে ব্যাঘাত না ঘটে তাই এই ব্যবস্হা। সুবিশাল লুভ্যরের ভেতরে ঢুকেই হতচকিত আমরা, ইলিয়ানা আর দলের দিকে নজর রাখবো, দেখব, না ভিড়ের ধাক্কা সামলাবো! ১৫৬৩সালে পাওলো ভেরোনেস এর আঁকা -The wedding feast at cana’ দেখে কেমন ভেবলে গেলাম। ৭০মিটার লম্বা এই চিত্রকর্মটি পুরো একটি দেওয়াল জুড়ে। ছবি তোলার উপায় নেই। আমার মোবাইলের ক্যামেরার সাধ্য কি সবটা ধরে! মাইকেল এঞ্জেলোর বিশ্ববিখ্যাত ভাস্কর্য।শতশত শিল্পকর্ম, যাদের নাম শুনেছি। প্লাস্টার অব প্যারিসে বিকৃত অনুকরণ দেখেছি। আজ সেসবের সামনে দাঁড়িয়ে কেমন কান্না পেয়ে গেল। এসব মানুষের হাতে তৈরি – আমাদের মতো রক্তমাংসের মানুষ! দুটো হাত দুটো পা দুটো চোখ সব একরকম নিয়ে তো আমিও জন্মেছ। কি করলাম এ জন্মে! এতো শত বিশাল প্রতিভার সামনে নিজের ক্ষুদ্রতায় কেমন দমবন্ধ হয়ে আসে অবাক হওয়ার ও ক্ষমতা থাকে না যেন।
লুভ্যরের মোস্ট ভিজিটেড সেলিব্রটি মোনালিসা। তার কাছে পৌঁছনোই এক যুদ্ধ। কী অসম্ভব ভিড় আর ধাক্কাধাক্কি। দুদণ্ড দাঁড়িয়ে দেখে কার সাধ্য। অজস্র মাথার ভিড়ে ছবি তোলার ফাঁকটুকুও পাওয়া যায় না। ইলিয়ানার কথাও হেডফোন থাকা সত্ত্বেও কিছু শোনা যাচ্ছে না। এক কোনে সরে গিয়ে দাঁতে দাঁত চিপে দাঁড়িয়ে দেখছি আর তো আসা হবে না। যে হাসি যে চাহনি নিয়ে এতোদিন এতো কিছু শুনে আসছি আজ কেন এতো হতাশ লাগছে! আমি ছবির সমঝদার নই। আর্টিস্টের মা হলেও ছবির চোখ আমার নেই। তাই হয় তো মোনালিসার সৌন্দর্য আমার অধরাই থেকে গেছে। তাকে দেখেছি তবে মোহিত হইনি।
ফরাসী বিপ্লবের কারণ লুভ্যর দেখলে অনেকটা বোঝা যায় কারণ এখানেই রয়েছে রাজপরিবারের ফ্রেঞ্চজুয়েলারি কালেকশন এর এক বিশাল সংগ্রহ।কী বিলাস বহুল জীবন কাটিয়েছে শতকের পর শতক জুড়ে।পঞ্চদশ লুই এর মুকুট থেকে শুরু করে রানীদের চোখ ধাঁধানো গয়না অজস্র হীরা – মণি মাণিক্যের সংগ্রহ।
চারঘন্টা টানা হেঁটে ঘুরে দেখে হা ক্লান্ত আমরা লুভ্যরের ভেতরেই পা ছড়িয়ে বসে পড়লাম। আর পারি না! রায় বাবুও দেখি ঐ ঠাণ্ডাতেই চোরাই জলের বোতল গলায় উপুর করেছেন। মনে মনে বললাম পথে এসো বাবা! খিদেয় পেট পিঠে ঠেকেছে।কাজু বরফির বাক্স খুলে মুখে দিতে গিয়ে দেখি ইলিয়ানা আমাদের দিকেই আসছে আমাদের ও দুঘন্টা আগে ও বাড়ি থেকে বেরিয়েছে পৌঁছাবেও দুঘন্টা পরে। আমার ভেতরের বাঙালি মহিলাটি জেগে উঠলেন। একটা কাজু বরফি এগিয়ে দিতেই একগাল হাসি নিয়ে ইলিয়ানা বললো – ‘মিষ্টি? আমি খুব ভালোবাসি মিষ্টি!’ওর একচিলতে কোমরের দিকে আড় চোখে তাকিয়ে আর একটা অফার করতেই চকচকে চোখে লুফে নিয়ে মুখে পুরে দিল! এখানেই আজকের মতো ভ্রমণ শেষ, এবার হোটেলে ফেরার পালা। ইলিয়ানার সঙ্গে আর এ জীবনে দেখা হবে না। এরপর প্যারিসের যে সব জায়গায় যাব গাইড লাগবে না। ট্যুর ম্যানেজারই পারবে। আমার কেমন মন কেমন করছে ইলিয়ানার জন্য। আজ ওকে বড্ডো জ্বালিয়েছি। আমার হাজারো প্রশ্ন ও কৌতূহল এর জবাব দিয়ে গেছে ক্লান্তিহীনভাবে।এমন সুশিক্ষিত পরিশিলীত গাইড আমি দেখিনি আগে। পাশাপাশি হাঁটতে হাঁটতে গল্প করতে করতে আমরা বেরিয়ে আসছি আণ্ডার গ্রাউন্ড গ্যারেজের দিকে, ওখানে আমাদের বাস অপেক্ষা করছে। আর ও গেট দিয়ে বেরিয়ে যাবে অর গন্তব্যে।জড়িয়ে ধরে গালে গাল ঠেকিয়ে দুপা এগিয়ে ইলিয়ানা আবার ফেরত এলো -আমি জিজ্ঞাসু চোখে এগিয়ে যেতেই ইলিয়ানা বললো – আমি কি আরো একটা মিষ্টি পেতে পারি আমার মেয়ের জন্য?
একদিন আমরা মাত্র কয়েকজন সদস্য নিয়ে পুকুরঘাট নামের একটি মেয়েদের ভার্চুয়াল দল খুলে ছিলুম। অচিরেই সে কয়েকটি সদস্যের দল কয়েক হাজার সদস্যের মেয়েদের দল হয় ওঠে। পুকুরঘাট দলের মত এত গুণী মেয়েদের সমাহার বাংলাদেশে খুব কম ভার্চুয়াল দলে আছে। কাজেই সেই দল সেখানেই আটকে থাকবে না বলা বাহুল্য। তাই পুকুরঘাট দলের অন্যতম উদ্যোগ হিসেবে প্রকাশিত হলো পুকুরঘাট পত্রিকা।
দারুণ লাগল পড়ে। লেখার মধ্যে একটা রস আছে। আমার প্যারিস ভ্রমণের কথা মনে পড়ে গেল। সত্যি তো, কোথাও ব্রেকফাস্ট থাকলে ‘ফাঁসির আসামীর মতো’ই গলা অবধি খাওয়া হয়ে যায় 😃 (ফাঁসির আসামী অতটা খায় কিনা সন্দেহ আমার)
এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেললাম। ভালো লাগলো
ভীষণ ভীষণ ভালো লাগছে পড়তে।
দারুণ লাগল পড়ে। লেখার মধ্যে একটা রস আছে। আমার প্যারিস ভ্রমণের কথা মনে পড়ে গেল। সত্যি তো, কোথাও ব্রেকফাস্ট থাকলে ‘ফাঁসির আসামীর মতো’ই গলা অবধি খাওয়া হয়ে যায় 😃 (ফাঁসির আসামী অতটা খায় কিনা সন্দেহ আমার)